‘আমি স্তম্ভিত এবং বিচলিত’, যুবভারতীকাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চাইলেন মেসি এবং দর্শকদের কাছে, গড়লেন তদন্ত কমিটি


মমতা জানান, এই ‘বিশৃঙ্খলা’-র তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করেছেন তিনি। কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায়।

যুবভারতী স্টেডিয়ামে বিশৃঙ্খলা নিয়ে সমাজমাধ্যমে পোস্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। — ফাইল চিত্র।



যুবভারতীতে লিয়োনেল মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে বিশৃঙ্খলা নিয়ে ব্যথিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ক্ষমা চেয়ে নিলেন ফুটবল-তারকার কাছে। সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে জানালেন, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে শনিবার সকালে যে ‘অব্যবস্থা’ হয়েছে, তার জন্য তিনি ‘স্তম্ভিত এবং বিচলিত’। এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গড়েছেন তিনি। তদন্তে নেতৃত্বে দেবেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। সকল ক্রীড়াপ্রেমীর কাছেও ক্ষমা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।


মুখ্যমন্ত্রী এক্স অ্যাকাউন্টে লেখেন, ‘‘সল্টলেক স্টেডিয়াম শনিবার যে অব্যবস্থা দেখা গেল, তাতে আমি বিচলিত এবং স্তম্ভিত।’’ তার পরেই তিনি জানান, মেসিকে একঝলক দেখার জন্য মাঠে যখন হাজার হাজার দর্শকের জমায়েত হয়েছিল, তখন তিনিও সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। সূত্রের খবর, বিশৃঙ্খলার খবর মেলার পরে মাঝপথ থেকে ফিরে যেতে হয় মমতাকে। এর পরেই নিজের পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমা চেয়ে নেন মেসির কাছে। তিনি লেখেন, ‘‘এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার জন্য আমি লিয়োনেল মেসি, সকল ক্রীড়াপ্রেমী এবং তাঁর ভক্তদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।’’




এর পরেই মমতা জানান, এই ‘বিশৃঙ্খলা’-র তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করেছেন তিনি। কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায়। কমিটিতে থাকবেন মুখ্যসচিব, অতিরিক্ত মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র এবং পার্বত্য বিষয়ক বিভাগ। তিনি লেখেন, ‘‘এই ঘটনায় বিশদ অনুসন্ধান করবে কমিটি। যাঁরা দায়ী, তাদের চিহ্নিত করা হবে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সুপারিশ করবে।’’ এর পরে আরও একবার সকল ক্রীড়াপ্রেমীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন মমতা।




শনিবার ঠিক সকাল ১১.৩০ মিনিটে যুবভারতীর মাঠে ঢোকে মেসির গাড়ি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন লুইস সুয়ারেজ় এবং রদ্রিগো ডি’পল। ফুটবলপ্রেমীদের উন্মাদনা দেখে উচ্ছ্বসিত দেখায় মেসিকে। তবে গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু মানুষ ঘিরে ধরেন তাঁকে। ফলে গ্যালারি থেকে মেসি, সুয়ারেজ় এবং রদ্রিগোকে দেখা যায়নি। এক সময় ক্ষুব্ধ ফুটবলপ্রেমীরা ‘উই ওয়ান্ট মেসি’ স্লোগান দিতে শুরু করেন। ক্রমেই বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় মাঠে। ভক্তদের অসন্তোষ ক্রমেই বাড়তে থাকে। এর পরে মেসিকে বার করে নিয়ে যাওয়ার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যুবভারতী। ফেন্সিং ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন দু’আড়াই হাজার মানুষ। পরিস্থিতি সামলাতে নামাতে হয় র‌্যাফ। কয়েক জন ছিঁড়ে ফেলেন গোল পোস্টের জাল। ভেঙে ফেলেন সাজঘরে যাওয়ার টানেলের ছাউনি। উত্তেজনা ছড়ায় স্টেডিয়ামের বাইরেও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। স্টেডিয়ামে যখন এই পরিস্থিতি, তখন সমাজমাধ্যমে এই ঘটনায় মেসি এবং তাঁর ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন মুখ্যমন্ত্রী। তদন্ত কমিটিও গড়েন তিনি।

Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post